উখিয়াতে নেই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসি

হুমায়ুন কবির জুশান,উখিয়া :


মানবতার শহরে এখনো গড়ে ওঠেনি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। স্কিট স্টেয়ার লোডার বা আবর্জনা বহনকারী আধুনিক ট্রাক নেই। অথচ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্যে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ এসেছে।

উখিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আলম বলেন, মানবতার মা খ্যাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয়দের জন্যে ৩০ শতাংশ বরাদ্ধের কথা উল্লেখ করে এনজিওদের কাজ করার ক্ষেত্রে স্থানীয়রা যেন বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহবান জানিয়েছেন। যদি ৩০ শতাংশ টাকার সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকতো তাহলে উখিয়াবাসির প্রতিটি ঘর হতো কয়েকতলা ভবন। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, উখিয়াতে নেই পৌরসভা। নেতৃত্বের শূন্যতায় অবহেলিত জনতা।

বর্তমানে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী উখিয়া সদর রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। দুজনই আপন চাচা-ভাতিজা হলেও তাদের মধ্যে রাজনৈতিক অনৈক্য ও মিল না থাকায় সরকারি দলের নেতাকর্মীরা দুভাগে বিভক্ত।

উখিয়া টেকনাফের সাংসদ শাহিন আক্তার সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির চৌধুরীর আপন বোন।

আমার মত অধিকাংশই উখিয়াবাসির অভিযোগ আব্দুর রহমান বদির মতন আমরা শাহিন আক্তার এমপিকে কাছে পাইনি। তিনি আমাদের পাশে থেকে খবরা-খবর নেননি। যেমনটি নিয়েছিলেন সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি। আর সরকারি দলের দুই বড় নেতার অমিলের কারণে আমরা সাধারণ মানুষ ন্যায্য প্রাপ্য্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। প্রশাসনের জবাবদিহিতাও নেই বল্লেই চলে। যে যার মতন চলছে। মানবতার শহর উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেশি-বিদেশি ১২০ টি এনজিও কাজ করছে।

তারাও স্থানীয় নেতা ও চেয়ারম্যানদের সাথে যথাযথভাবে সমন্বয় করছেন না বলে জানা গেছে। উখিয়া দারোগা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বারই এই বাজারের ডাক ওঠা টাকা থেকে বাজার উন্নয়ন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিস্কার রাখার জন্যে বরাদ্ধ রাখা দরকার। প্রতি বর্ষা মৌসুমে উখিয়া দারোগা বাজারের ড্রেনের পানি রাস্তায় থৈ থৈ করে। যথাসময়ে তা পরিস্কার করা হয় না। ফলে জনদুর্ভোগ বাড়ে।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দে বলেন, উখিয়া প্রেস ক্লাবের পাশের ময়লা-আবর্জনা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩০ মে জনস্বাস্হ্য প্রকৌশলী আল আমিনের তত্বাবধানে অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন। উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রেস ক্লাবের পাশে রাস্তার ধারে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি। প্রতিদিন আমাদের এই পথ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।

সামাজিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের সহ-সভাপতি শাহ আলম বলেন, উখিয়াতে রাস্তা-ঘাটের উন্নতি হলেও সঠিক নেতৃত্বের অভাবে এখনো গড়ে উঠেনি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। পরিবেশসম্মত উপায়ে আধুনিক পদ্দতিতে বর্জ্য অপসারণের জন্য আমি জোর দাবি জানাই। উখিয়া সদরসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার নির্দিষ্ট স্থানে জমাকৃত বাসা-বাড়ির আবর্জনা ভ্যানে করে ১ দিন নিলে ৫ দিন নিতে আসেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। যেন কোন কিছুরই তদারকি নেই।

এ ব্যাপারে উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, প্রেস ক্লাবের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের না হওয়া আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিহিত করেছি। তিনি সাথে সাথে উপ-জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে তা অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সাধারণ জনগন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

উপ-জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আল আমিন জানান, ৩০ মে অপসারণের লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কয়েক জায়গায় শ্রমিকের কথা বলা হয়েছে। শ্রমিক পাওয়া গেলেই কাল ময়লা অপসারণ করা হবে।